একজন ধর্মগুরুর সঙ্গে সম্পর্ক নির্ধারক কারণ

পরিচায়ক মন্তব্য

সমস্ত বৌদ্ধ পরম্পরা মার্গ প্রদর্শক হিসেবে গুরুর উপর গুরুত্ব দেয়। একজন আধ্যাত্মিক গুরু শুধু এসব করেন না-

  • তথ্য দান
  • প্রশ্নের উত্তর দান
  • শিষ্য কি বুঝলো তা পরীক্ষা করা
  • শিষ্যের বুদ্ধিমত্তা, আবেগ এবং ধ্যান-ভাবনার কতটা উন্নতি হল তা দেখা।

আধ্যাত্মিক গুরু করেন-

  • সম্বর (দীক্ষা) ও অভিষেক প্রদান করেন।
  • আদর্শ হিসেবে নিজেকে তুলে ধরেন।
  • নিজের উদাহরণ দিয়ে অপরকে অনুপ্রাণিত করেন।
  • বুদ্ধের পরম্পরা সঙ্গে যোগসূত্র হিসেবে কর্ম করেন।

গুরু-শিষ্যের মধ্যে বহু রকমের স্তর রয়েছে আর সেই রকমই রয়েছে মার্গ সমান সম্পর্ক গড়ে তোলার নানারকম উপায়।

সাংস্কৃতিক বিষয়

গুরুর নিকট অধ্যয়নের বিষয়ে এশীয় পরম্পরা থেকে পশ্চিমী দেশগুলির অবস্থা একেবারে অন্যরকম।

এশীয় পরম্পরায় অধিকাংশ ধর্মের শিষ্যগণ হলেনঃ

  • ধার্মিক মার্গের প্রতি সম্পূর্ণভাবে সমর্পিত ভিক্ষু অথবা ভিক্ষুণী।
  • ধর্ম-অধ্যয়ন এবং সাধনা ছাড়া অন্য কোন বড় কাজ করেন না।
  • একজন অশিক্ষিত শিশুর মত বৌদ্ধধর্ম অধ্যয়ন করে।
  • এরফলে বড় হলে অংক, বিজ্ঞান ও সমাজ বিদ্যার মত সাধারণ বিষয়ে সর্বনিম্ন শিক্ষা থাকে।
  • পরম্পরাগত এশিয় সমাজে নারীর ভূমিকা এবং ক্ষমতার পরিকাঠামো, বিশেষ ক’রে নারীরা হলেন দুদিকেই নিচু স্তরের, এমন ধারণা স্বীকার করেন।

আধুনিক পশ্চিমী দুনিয়ায় অধিকাংশ শিষ্যরা হলেন-

  • গৃহস্থ, পেশাগত ও ব্যক্তিগত জীবনে ব্যস্ত।
  • ধর্মের জন্য বেশি সময় দিতে পারে না।
  • শিক্ষিত প্রাপ্তবয়স্ক হয়ে ধর্ম-অধ্যয়ন শুরু করে।
  • লিঙ্গ সমতা ও গণতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থা দাবি করে।

অর্থনৈতিক দিকে, পরম্পরাগত এশীয় সমাজ ধর্মগুরুদের দায়িত্ব দেন। এমনকি নিজের গুরু না হলেও তাদের দান করে। আধুনিক পশ্চিমী দেশে ধর্মগুরুদের নিজেদের ব্যবস্থা নিজেকেই করতে হয়। অনেকেই ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করেন এবং তাতে অর্থনৈতিক, সাংগঠনিক এবং প্রশাসনিক ব্যবস্থাপনা থাকে।

এসবই গুরু-শিষ্য সম্পর্কে প্রভাব বিস্তার করে। বহু আধ্যাত্মিক অন্বেষীগণ লাভবান হয়েছেন, তবে অনেকে ভুলভ্রান্তি এবং আধ্যাত্মিকভাবে মর্মাহতও হয়েছেন।

বিপদ

তিব্বতি পরম্পরার ক্ষেত্রে ‘গুরু-ভক্তি’ নামক গ্রন্থাদি বিপদটি আরও বৃদ্ধি হয়েছে। ঐরকম গ্রন্থের পাঠক হলেন সম্বরবান, তান্ত্রিক অভিষেকের প্রস্তুতির জন্য পর্যালোচক ভিক্ষু বা ভিক্ষুণীবৃন্দ। ধর্ম-প্রতিষ্ঠানে যারা নবাগত বৌদ্ধ ধর্মের বিষয়ে কিছুই জানে না, তাদের জন্য ওই নির্দেশাবলী নির্ধারিত নয়।

আমাদের দুটি অতি থেকে দূরে থাকতে হবে।

  1. ধর্ম গুরুকে দেবতুল্য করা যা সাদাসিধে ভাবের সঙ্গে বিকৃতির দরজায় খুলে দেয়।
  2. তাদের ভৌতিকীকরণ যা ভ্রান্তির দরজা খুলে দেয় এবং প্রকৃত প্রেরণা ও সুমঙ্গলের পথ রুদ্ধ হয়।

একটি অপরম্পরাগত বিশ্লেষণাত্মক পদ্ধতি

ধর্ম গুরুদের নিয়ে এই বিষয়টি আমি Relating to Spiritual Teachers: Building a Healthy Relationship (Ithaca: Snow Lion 2000) নামক গ্রন্থে বিশ্লেষণ করেছি। এখানে হাঙ্গেরিয়ান মনোবিদ ড: ইভান বসজারমেনিনেগি দ্বারা প্রস্তাবিত এবং উদ্ভাবিত পদ্ধতি থেকে বিষয়টি বিশ্লেষণে আমি একটি অপরম্পরাগত পদ্ধতি উত্থাপন করছি। ডক্টর ইভান বসজারমেনিনেগি পারিবারিক এবং বিষয়ভিত্তিক থেরাপি প্রতিষ্ঠাতাদের মধ্যে ছিলেন একজন চিকিৎসক।

সম্পর্কের ছয়টি দিক

গুরু-শিষ্য সম্পর্কটিকে আমরা ছয়টি দিক বা মাত্রায় বিশ্লেষণ করতে পারি। সম্পর্কে যদি কোন সমস্যা থাকে তাহলে এর মাধ্যমে সমস্যাটি কোথায় সেটা চিহ্নিত ক’রে উভয় পক্ষ সম্পর্কে ভারসাম্য এনে একটি সুন্দর সম্পর্ক গড়ে তুলতে পারবে।

ছয়টি দিক হলঃ

  1. প্রত্যেক পক্ষ সম্পর্কিত সত্য এবং সম্পর্ক নির্ধারক বিষয়াদি।
  2. প্রত্যেক পক্ষের সম্পর্কের উদ্দেশ্য এবং মনোবৈজ্ঞানিক উপাদান যা সম্পর্কে প্রভাব ফেলে।
  3. যে ভূমিকা প্রত্যেক পক্ষ নিজেকে সংজ্ঞায়িত করে এবং অন্যরা সম্পর্কটিকে কীভাবে দেখে, এইভাবে তাদের আকাঙ্ক্ষার উদয় এবং নিজেরা কী অনুভব করে (তার বিশ্লেষণ)।
  4. প্রত্যেক পক্ষের প্রতিশ্রুতি বা দায়িত্ব এবং সম্পর্কে যুক্ত হওয়ার মাত্রা আর তার সঙ্গে যুক্ত মনোবৈজ্ঞানিক উপাদান যা সম্পর্কে প্রভাব বিস্তার করে।
  5. প্রত্যেক পক্ষের অপরাপর মনোবৈজ্ঞানিক উপাদান সমূহ।
  6. সম্পর্কটি প্রত্যেক পক্ষের মধ্যে কীভাবে কাজ করে এবং প্রভাবিত করে সেটা দেখা।

প্রত্যেক পক্ষ সম্পর্কিত সত্য এবং সম্পর্ক নির্ধারক বিষয়াদি।

প্রত্যেক পক্ষের মধ্যে যেসব সত্য সম্পর্ককে প্রভাবিত করে তা হল:

  • লিঙ্গ ও বয়স
  • সংস্কৃতির উৎস- এশীয় অথবা পশ্চিমী সভ্যতা
  • ব্যক্তিগত যোগাযোগ এবং/ বা উপদেশের জন্য একই ভাষার প্রয়োজন, না কি অনুবাদকের সাহায্য নিতে হয়।
  • ভিক্ষু না গৃহস্থ।
  • ধার্মিক এবং পার্থিব শিক্ষার পরিমাণ
  • নৈতিক পরিপক্কতা এবং আবেগের দিক থেকে আধ্যাত্মিক গুরু বা শিষ্য হওয়ার যোগ্যতা
  • একে অন্যকে কতটা সময় দিতে পারছেন।
  • অন্য শিষ্যদের সংখ্যা।
  • স্থায়ীভাবে বসবাসকারী গুরু না মাঝে-মাঝে আসেন।

ব্যবস্থাটি হতে পারে এমন জায়গায়:

  • একটি পশ্চিমী ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান কোন একটি শহরের কেন্দ্র বা আবাসিক কেন্দ্র।
  • যদি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান হয় তাহলে সেটা স্বাধীন, নাকি অন্য কোন বড় ধর্মীয় সংগঠনের একটি অংশ।
  • এশিয়া বা পশ্চিমের কোন দেশের বিহার।

প্রত্যেক পক্ষের সম্পর্কের উদ্দেশ্য এবং মনোবৈজ্ঞানিক উপাদান যা সম্পর্কে প্রভাব ফেলে।

যেকোন সম্পর্কে উভয় পক্ষের উদ্দেশ্য প্রায় একই প্রকার মিশে যায়। গুরু-শিষ্য সম্পর্কও এর ব্যতিক্রম নয়।

গুরুর কাছে একজন শিষ্য এসব কারণে আসে-

  • তথ্য অর্জন ও সত্যের অন্বেষণ করতে।
  • ধ্যান-শিক্ষা লাভ করতে।
  • নিজের ব্যক্তিত্বের উপর নজর দিতে।
  • এই জীবনে উদ্দেশ্য বিকাশ করতে।
  • ভবিষ্যতের জীবন উন্নতি করতে।
  • অনিয়ন্ত্রিত পুনরাবৃত্ত (সংসার) থেকে মুক্তি লাভ করতে।
  • বুদ্ধত্ব লাভ ক’রে অপরকেও মোক্ষ ও বুদ্ধত্ব লাভে সাহায্য করতে।
  • চাপমুক্ত হওয়ার শিক্ষা গ্রহণ করতে।
  • একই রকম মানসিকতা সম্পন্ন শিশুদের মধ্যে সামাজিক যোগাযোগ করতে।
  • দুষ্প্রাপ্যের প্রাপ্তি করতে।
  • শারীরিক বা মানসিক সমস্যার অলৌকিক আরোগ্য লাভ করতে।
  • ‘ধর্ম-জাঙ্কির’ মতো একজন বিনোদনমূলক সহজাত দক্ষ শিক্ষকের কাছ থেকে ‘ধর্ম-সমাধান’ গ্রহণ করতে।

তাছাড়াও শিষ্য গুরুর কাছে এগুলিও আশা করতে পারে:-

  • বৌদ্ধ মার্গে চলার জন্য অনুপ্রেরণা ও মার্গ দর্শন।
  • থেরাপি (চিকিৎসা)।
  • গ্রাম্য নির্দেশিকা
  • একজন মাতা-পিতার বিকল্প।
  • অনুমোদন।
  • কোন একজন ব্যক্তি যিনি তাকে বলবেন জীবনে কী করণীয়।

বিনিময়ে গুরুও আশা করবেন

  • সত্য কথাই জানাবেন।
  • মৌখিকভাবে আগম-দান এবং ধর্ম-সংরক্ষণ।
  • শিষ্যের ব্যক্তিত্ব বিকাশে প্রয়াস।
  • শিষ্যের ভবিষ্যৎ জীবনের মঙ্গলের জন্য বীজ বপন।
  • শিষ্যের উন্নত পুনর্জন্ম, মোক্ষ এবং বুদ্ধত্ব লাভে সহায়তা।
  • ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান অথবা ধর্ম-প্রতিষ্ঠানের সাম্রাজ্য-এর স্থাপন।
  • তার পরম্পরায় ধর্মান্তরিত হওয়া অর্থাৎ গুরু পরম্পরার বিস্তার।
  • ভারতের কোন বিহারকে সহায়তা করা বা তিব্বতে বিহার নির্মাণে সহায়তার জন্য অর্থ সংগ্রহ।
  • শরণার্থী হিসাবে একটি নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজ।
  • জীবিকা উপার্জন বা ধনী হওয়া
  • অপরকে নিয়ন্ত্রণ ক’রে ক্ষমতাবান হওয়া।
  • যৌনতার সুবিধা নেওয়ার ইচ্ছা।

নেতিবাচক মনোবৈজ্ঞানিক বিষয়াদি যেগুলি উভয়পক্ষকে প্রভাবিত করে:

  • নিঃসঙ্গতা
  • একঘেয়েমি
  • দুঃখ
  • নিরাপত্তাহীনতা
  • হাল-ফ্যাশন-এর সঙ্গে চলা
  • গোষ্ঠীর চাপ

যে ভূমিকা প্রত্যেক পক্ষ নিজেকে সংজ্ঞায়িত করে এবং অন্যরা সম্পর্কটিকে কীভাবে দেখে, এইভাবে তাদের আকাঙ্ক্ষার উদয় এবং নিজেরা কী অনুভব করে তার বিশ্লেষণ।

একজন ধর্মগুরু নিজেকে অথবা শিষ্য গুরুকে এইভাবে দেখতে পারে

  • বৌদ্ধ ধর্মের একজন অধ্যাপক বৌদ্ধ ধর্মের তথ্যদাতা।
  • একজন ধর্ম উপদেশদাতা কীভাবে ধর্মকে জীবনে প্রয়োগ করা যায় তার দিক নির্দেশক।
  • একজন ধ্যান বা ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানের প্রশিক্ষক।
  • একজন আধ্যাত্মিক পরামর্শদাতা, সম্বর (দীক্ষা)-দাতা।
  • তন্ত্র-অভিষেক প্রদান করার মতো তান্ত্রিক গুরু।

একজন শিষ্য নিজেকে বা গুরু শিষ্যকে এইভাবে দেখতে পারেনঃ

  • একজন বৌদ্ধ শিষ্য যিনি তথ্যাদি সংগ্রহ করেন।
  • ধর্মের অনুগামী যিনি ধর্মকে নিজের জীবনে প্রয়োগ করতে শেখে।
  • ধ্যান বা ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানাদির শিষ্য।
  • গুরুর কাছ থেকে সাধারণ সম্বর গ্রহীতা।
  • ব্যক্তিগত স্তরে গুরুর নিকট হইতে নির্দেশ প্রাপ্ত শিষ্য।

এই দিকটির অন্য একটি বিষয় হল এই সম্পর্কটির কারণে প্রত্যেকে নিজের সম্পর্কে কেমন অনুভব করে। 

শিষ্য হয়তো অনুভব করে যে তিনি হলেন:

  • সুরক্ষিত
  • কোন একজনের অধীনে আছেন
  • তিনি পূর্ণ 
  • একজন সেবক।
  • একটি পরম্পরার সদস্য।

আধ্যাত্মিক গুরু অনুভব করতে পারেন যে তিনি হলেন,

  • একজন গুরু
  • একজন বিনয়ী সাধক।
  • একজন রক্ষক।
  • একজন দেশনা দাতা।
  • একজন মনোবিদ।
  • একটি আধ্যাত্মিক বা ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের প্রশাসক।
  • একটি বিহারের আর্থিক সহায়ক।

প্রত্যেক পক্ষের প্রতিশ্রুতি বা দায়িত্ব এবং সম্পর্কযুক্ত হওয়ার মাত্রা আর তার সঙ্গে যুক্ত মনোবৈজ্ঞানিক উপাদান যা সম্পর্কের প্রভাব বিস্তার করে। 

শিষ্য হয়তোঃ

  • অনুষ্ঠানাদির দক্ষিণা বা অনুদান সহ দান করে, দক্ষিণা না দিয়েই অধ্যয়ন অথবা গুরুকে যেকোন কিছু দান করে।
  • বৌদ্ধ ধর্ম, গুরু বা পরম্পরার প্রতি গভীর আস্থায় যুক্ত অথবা আকস্মিকভাবে যুক্ত থাকে।
  • গুরুর কাছ থেকে সম্বর গ্রহণের জন্য সংকল্প করা বা গ্রহণ করা হয়ে যায়।
  • গুরুকে সাহায্য করার দায়িত্ব গ্রহণ।
  • ঋণী ভাব
  • কৃতার্থ ভাব।
  • নিজেকে বিশেষ অনুগত অনুভব করা। এই বিষয়ে গোষ্ঠীর চাপ গুরুত্বপূর্ণ।
  • ভুল করলে নরকে যেতে হবে এই অনুভব করা।

আধ্যাত্মিক গুরুও হয়তো-

  • নৈতিকতা অনুসারে শিষ্যকে ধর্ম মার্গে অগ্রসর করানোর দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
  • শিষ্যের জীবনকে সুপথে নিয়ে যাওয়ার জন্য কী করনীয় তা বলার ইচ্ছা প্রকাশ করেন।
  • গুরুর কর্তব্য করা, কারণ তার গুরুই তাকে দেশনা দেওয়ার জন্য প্রেরণ করেছেন।
  • আমি সঠিক কাজ করছি মাত্র। গুরু পক্ষ থেকে শিষ্যকে শুধুমাত্র কাজ করতে দেখা।

যে সমস্ত নেতিবাচক মানসিক উপাদান প্রভাবিত করে সেটা দেখাঃ

  • প্রতিশ্রুতির ভয়।
  • কর্তৃপক্ষের ভয়, অতীতের অপব্যবহার জনিত কারণ হতে পারে।
  • কার্যকর বা ভালোবাসার প্রয়োজন অনুভব করা।
  • মনোযোগ এর প্রয়োজন।
  • অপরকে নিয়ন্ত্রণের প্রয়োজন।
  • নিজেকে প্রমাণ করার প্রয়োজন।

প্রত্যেক পক্ষের অপরাপর মনোবৈজ্ঞানিক উপাদানঃ

উভয় পক্ষে (গুরু-শিষ্য) যা অন্তর্ভুক্ত সেটা হলঃ

  • বহির্মুখী বা অন্তর্মুখী
  • বুদ্ধিদীপ্ত আবেগপ্রবণ বা ভক্তিমূলক।
  • উষ্ণ /উচ্ছল বা শীতল /নিস্পৃহ।
  • শান্ত বা উগ্র।
  • সময় ও মনোযোগের জন্য লোভী।
  • অন্য শিষ্য বা গুরুর প্রতি ঈর্ষা পরায়ণ।
  • কম সম্মান বা অহংকারে পূর্ণ।

সম্পর্কটি প্রত্যেক পক্ষের মধ্যে কীভাবে কাজ করে এবং প্রভাবিত করে সেটা দেখা।

গুরু-শিষ্য কি একসঙ্গে গঠন হয়?

  • একটি ভালো বা মন্দ দল।
  • এমন একটি দল যা একে অপরের সেরাটি বের ক’রে আনতে পারে নাকি একে অপরের ক্ষমতার পক্ষে বাধা সৃষ্টি করে।
  • বিভিন্ন প্রত্যাশা থাকায় একটি এমন দল যায় সেখানে একে-অপরের সময় নষ্ট করে।
  • এমন একটি দল যা পুরোহিত তন্ত্রের মতো ক্রমান্বয়ে উচ্চ ব্যাক্তিদের ক্ষমতায়নের পরিকাঠামো কায়েম করে এবং সেখানে শিষ্যরা ভাবেন ওদের অপব্যবহার হচ্ছে এবং নিয়ন্ত্রিত থাকায় আত্মবিশ্বাসহীনতা দেখা যাচ্ছে। আবার গুরু ভাবছেন আমি এখানে কর্তা এবং সর্বময় প্রভু। এখানে একপক্ষ কী ভাবছেন বা অনুভব করছেন তা অপরপক্ষের মতো নাও হতে পারে।
  • এমন একটি দল যেখানে যে কেউ বা উভয়পক্ষ অনুপ্রাণিত বা নিঃশেষিত অনুভব করে।

সারাংশ

গুরু-শিষ্য সম্পর্ককে এই ছয়টি দিক বা মাত্রা এবং তাদের প্রতিটি উপাদানের পরিপ্রেক্ষিতে মূল্যায়ন করা প্রয়োজন। উপাদানগুলি যদি একে-অপরের সঙ্গে না মেলে তাহলে উভয় পক্ষকে তার সমন্বয় এবং সামঞ্জস্য সাধন করতে হবে বা গ্রহণ করতে হবে। যদি এইসব সমস্যা সমাধানের জন্য এক পক্ষ অনড় থাকে যা সাংস্কৃতিক আবেগ জনিত কারণে হতে পারে, তাহলে অপর পক্ষকে তার সমন্বয় করতে হবে যাতে সম্পর্কটিতে দূরত্ব না থাকে।

Top